কাজী নজরুল ইসলাম সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত নোট

১.কাজী নজরুল ইসলামের পৈত্রিক নিবাস,জন্মস্থান ও শ্বশুর বাড়ি কোথায়?
উঃ ১৮৯৯ সালের ২৪ মে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহন করেন।তার স্বশুর বাড়ি কুমিল্লার দৌলতপুরে।তবে প্রমীলা দেবীর সাথে বিবাহ হয় কলকাতায়।
২.তার স্ত্রীদের নাম, সন্তানদের নাম কি? তিনি স্ত্রী-সন্তানকে আদর করে কি নামে ডাকতেন?
উঃ ১৯২১ সালে মুসলিম সাহিত্য সমিতির গ্রন্থ প্রকাশক আলী আকবর খানের ভগ্নী নার্গিস আসার খানম/নার্গিস বেগমের সাথে(প্রকৃত নাম সৈয়দা হক) বিবাহ ঠিক হয়।তবে ঘরজামাই থাকা নিয়ে সমস্যার জন্য কাবিনের বেশি আগায়নি।কবি তাকে ইরানি ফুল নার্গিসের নামে ডাকতেন।১৯২৪ সালের ২৪/২৫ এপ্রিল বিরজা সুন্দরীর(যার শরবত খেয়ে নজরুল অনশন ভেঙ্গে ছিলেন) ভাসুরের মেয়ে আশালতা সেনগুপ্তের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।নজরুল বিবাহের পরে তার নাম রাখেন প্রমীলা দেবী।তবে তিনি তাকে দুলু বা দুলি নামে ডাকতেন।

সন্তানদের নামঃ
ক)কৃষ্ণ মোহাম্মাদ(শীশুকালে মারা যায়)
খ)অরিন্দম খালেদ(৪ বছর বয়সে বসন্ত রোগে মারা যায়)।কবি তাকে বুলবুল নামে ডাকতেন।বুলবুল নামে একটা গানের সংকলন আছে।
গ)কাজী সব্যসাচী(১৯২৯-১৯৭৯)
ঘ)কাজী অনিরুদ্ধ (১৯৩২-১৯৭৪)

৩.নজরুল কতবার ঢাকায় আসেন?কত বার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন?কতবার কুমিল্লায় আসেন?প্রথম কবে বাংলাদেশে আসেন?(স্বাধীন হওয়ার আগে)
উঃ ঢাকায় আসেন ১৩ বার।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন ৫ বার।কুমিল্লায় আসেন ৫ বার।ঢাকায় প্রথম আসেন ১৯২৬ সালের জুন মাসে শেষ সপ্তাহে।
৪.নজরুলের স্মৃতিবিজড়িত স্থান কি কি?
উঃ কুমিল্লা,সিরাজগঞ্জে(যেখানে ১৯৩২ সালে মুসলিম যুব সমাজের উদ্দেশ্যে যৌবনের গান পাঠ করেন)ও ত্রিশাল(ময়মনসিংহ)।
৫.দরিরামপুরের সেই পুলিশ অফিসারের নাম কি?তার স্ত্রীর নাম কি ছিল?
উঃকাজী রফিজ উদ্দিন।তার স্ত্রীর নাম শামসুন্নেসা।
৬.রণসঙ্গীত কত সালে লেখেন?
উঃনতুনদের গান শিরোনামে ১৯২৮ সালে শিখা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।এটি সন্ধ্যা কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত।এই কবিতার প্রথম ২১ লাইন ১৯৯৬ সালের ৫ ডিসেম্বর পদাতিক বাহিনীর রণসংগীত হিসেবে গৃহীত হয়।
৭.কতবার কারাবরণ করেন?

উঃ২ বার।আনন্দময়ীর আগমনে ও বিদ্রোহী কবিতার জন্য ১ বছর(গ্রেপ্তার হোন ১৯২৩ সালে) এবং প্রলয়শিখা রচনার জন্য ৬ মাস।(গ্রেপ্তার হোন ১৯২৬ সালে)।
৮.খিলাফত আন্দোলন সম্পর্কে তার দৃষ্টিভঙ্গি কেমন ছিল?তিনি কাকে সমর্থন করতেন?
উঃ কাজী নজরুল ইসলাম মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে অসহযোগ আন্দোলন এবং মাওলানা আবুল কালাম আজাদ,মাওলানা শওকত আলী ও মোহাম্মদ আলীর নেতৃত্বে খিলাফত আন্দোলনে আস্থাশীল ছিলেন না।স্বদেশে সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে স্বরাজ বা স্বাধীনতা অর্জন আর মোস্তফা কামাল আতাতুর্কের নেতৃত্বে তুরস্কের সালতানাত উচ্ছেদকারী নবয তুর্কি আন্দোলনের প্রতি নজরুলের সমর্থন ছিল।তথাপি ভারতের ভারতের হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের সম্মিলিত সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রামের জন্য তিনি এই দুটি আন্দোলনে যোগ দেন।
৯.উৎসর্গীকৃত লেখাগুলো
ক)অগ্নিবীণা- বারীন্দ্রকুমার ঘোষ
খ)সঞ্চিতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
গ)চিত্তনামা-বাসন্তী দেবী(দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের স্ত্রী।নজরুল তাকে মা বলে ডাকতেন।)
১০.কতসালে স্থায়ীভাবে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়?কত সালে নাগরিকত্ব দেয়া হয়?
উঃ ১৯৭২ সালের ২৪ মে ভারত সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে দেশে নিয়ে আসা হয়।১৯৭৬ সালে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব এবং ফেব্রুয়ারি মাসে একুশে পদক দেয়া হয়।
১১.২০০৪ সালের বিবিসি জরিপে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালির তালিকায় ৩য় স্থান লাভ করেন।১৯৪০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক জগত্তারিণী পদক ,১৯৬০ সালে ভারত সরকার কর্তৃক পদ্মভূষণ পদক লাভ করেন।
উল্লেখ্য যে কাজী নজরুল ইসলামকে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় কবির মর্যাদা দেয়া হয়নি।সেটা নিয়ে নজরুল ইন্সটিটিউট এর পরিচালক আক্ষেপ করে পত্রিকায় কলাম ও লিখেছিলেন।

কাজী নজরুল ইসলামকে বাংলাদেশে আনা হয় ১৯৭২সালে,
ঢাবি নজরুলকে ডি,লিট উপাধি দেয় ১৯৭৪ সালে
জাতীয় কবি হিসেবে ঘোষণা >> ১৯৭৪ ( তবে সাংবিধানিক
স্বীকৃতি এখনও দেওয়া হয়নি । )
একুশে পদক পান > ১৯৭৬সালে
বাংলাদেশি নাগরিকত্ব দেয়া হয় ১৯৭৬ সালে।

নিজের সুবিধামত পড়ার জন্য টাইমলাইনে শেয়ার করে রাখুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 + 8 =