ক্যাডার চয়েজ

ক্যাডার কীভাবে দেওয়া হয় এটা নতুনদের কাছে একটা গোলক ধাঁধা। এরপর কোন কোন ক্যাডার চয়েজ দিব, ক্যাডারের সংখ্যা দেখবো, নাকি অন্যকিছু? সাধারণ আগে দিব নাকি টেকনিক্যাল আগে দিব? শিক্ষা আগে দিলে অসুবিধা কী? পররাষ্ট্র কেন প্রথমে দিব? পুলিশ না দিলে কী হবে? এরকম শত শত প্রশ্ন আপনাদের মনে। সব প্রশ্নের উত্তর পাবেন। লেখাটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
কীভাবে ক্যাডার দেওয়া হয়?
বুফের সাথেতো সবাই কম বেশি পরিচিত। চিন্তা করুন পিএসসি একটা দাওয়াত (সার্কুলার) দিল সবাইকে। যারা দাওয়াতে অংশগ্রহণ করবে তারা অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করবে (আবেদন)। আপ্যায়নের সময় পিএসসি একজনকে একটা আইটেম (ক্যাডার) ই দিবে। আবেদনের সময় আইটেম গুলো থেকে পছন্দ অনুযায়ী পছন্দক্রম (ক্যাডার চয়েজ) দিতে হবে। এরপর সে দাওয়াতে সিরিয়াল অনুযায়ী ডাকবে। এই সিরিয়াল ঠিক করার জন্য পরীক্ষা নিবে। (প্রিলি-আবেদন কমানোর জন্য, লিখিত+ভাইভা- সিরিয়াল করার জন্য)।
লিখিত ও ভাইভার নম্বর ঠিক করে একটা লাইন দাড়(সিরিয়াল) করবে। এখন বেশি নম্বর প্রাপ্ত থেকে শুরু করবে আপ্যায়ন। প্রথমে সবচেয়ে বেশি নম্বর প্রাপ্ত। তিনি যাবেন, চয়েজ এর এক নম্বর আইটেম (ক্যাডার) পাবেন। নিয়ে চলে আসবেন। এরপরের জন যাবেন, পছন্দের এক নম্বর আইটেম যদি আগেই শেষ না হয়, তাহলে সেটি নিয়ে চলে আসবেন। এক নম্বর শেষ হয়ে গেলে পছন্দের দ্বিতীয় আইটেম পাবেন। সেটা নিয়ে চলে আসবেন। এভাবে আইটেম শেষ না হওয়া পর্যন্ত সিরিয়ালি যেতেই থাকবেন।
এবার ধরুন, শেষ হওয়ার আগেই একজন গেলেন। তার পছন্দের আইটেম ছিল প্রশাসন, পুলিশ। কিন্তু এই দুই আইটেম আর নাই। শুধু সমবায় আছে। যেহেতু তার চয়েজ এ এই আইটেম ছিল না, তিনি কিছুই পাবেন না।
এবার ধরুন, একজন পছন্দ দিল এরকম সমবায়, তথ্য, পুলিশ। এই তিন আইটেম এখনো আছে। তাহলে তিনি পছন্দক্রম অনুযায়ী সমবায় পাবেন।
এবার আরেকজন ধরুন, পছন্দক্রম প্রশাসন, শিক্ষা, পুলিশ। তার সিরিয়াল আসলো। প্রশাসন শেষ। দ্বিতীয় পছন্দ শিক্ষা। যদি টেকনিক্যাল ক্যাডারের নম্বরে তিনি সিরিয়ালে থাকেন এবং খালি থাকে তাহলে শিক্ষা পাবেন। সেক্ষেত্রে পুলিশ খালি থাকলেও পুলিশ পাবেন না। টেকনিক্যাল ক্যাডারের নম্বর অনুযায়ী শিক্ষা না পেলে তখন আবার জেনারেল দেখবে, তখন পুলিশ থাকলে পুলিশ পাবেন।
করণীয়:
পছন্দ ঠিক করে নিজের আগ্রহ অনুযায়ী সবগুলো চয়েজ দেওয়া উত্তম, পদের সংখ্যা দেখার দরকার নেই। পররাষ্ট্র শুরুতে দিতে বলে এজন্যনা যে অনেকেই শুরুতে দেয়। মূলত বলে যদি আপনি সর্বোচ্চ নম্বরও পান, তখন প্রথম পছন্দ শিক্ষা হলে সেটাই পাবেন আপনি, পররাষ্ট্র না।
এবার আমার আগের লেখাটি নিচে এড করে দিই..
ক্যাডার চয়েজ: অল্প কথায়
# পররাষ্ট্র (দিলে প্রথমে, না দিলে বাদ)
# প্রশাসন/কাস্টমস/ট্যাক্স/পুলিশ/অডিট (আপনার পছন্দ অনুসারে ইচ্ছেমতো সাজিয়ে নিন)
# স্বাস্থ্য/প্রকৌশল/কৃষি/আনসার/বন/খাদ্য/বাণিজ্য /শিক্ষা/ তথ্য/রেল/ডাক/সমবায়/পরিবার পরিকল্পনা (যার যেমন সুবিধা, ইচ্ছে)
মনে রাখবেন,
1. আবেগে, সার্কুলারে পদের সংখ্যা দেখে চয়েজ দিবেন না।
2. যদি আপনার স্বামী বা স্ত্রী চাকরিজীবী হয় তাহলে চয়েজ ঠিক করার আগে ভেবে নিন। অনেক সার্ভিসে পরিবার থেকে দূরে থাকতে হবে।
3. সমাজের চোখ না দেখে নিজের মনকে বুঝার চেষ্টা করুন।
4. চাকরি মানে চাকরি, কাজ করবেন, মাস শেষে বেতন পাবেন, খুব বেশি প্রত্যাশা নিয়ে চাকরিতে আসবেন না।
5. সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটা কথা, আপনি হয়তো শুনেছেন, সরকারি চাকরি মানে টাকা আর টাকা(অবৈধ); দিন বদলাচ্ছে, বদলাইছে! অনেক টাকার মালিক হতে চাইলে ব্যবসা বা অন্য কিছু করুন। আর সত্ থেকে দেশসেবা করতে চাইলে সরকারি চাকরিতে আসুন।
জোনায়েদ হোসেন
বিসিএস তথ্য (৩৫)
বিসিএস কর (৩৬)
বিসিএস প্রশাসন (৩৭)

নিজের সুবিধামত পড়ার জন্য টাইমলাইনে শেয়ার করে রাখুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

8 − two =