বিসিএস পরীক্ষায় ভাল করার কৌশলঃ গণিত

গণিত নিয়ে আমি সব সময় মনে করি, যে প্রিলির সময় গণিত রিটেনটা মাথায় নিয়ে পড়তে পারলে ভাল হয়। কিন্তু ৩৮ তম লিখিত প্রশ্ন দেখে একটু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়েছিলাম। তখন বুঝতে পারলাম, গতানুগতিক প্রশ্নের প্যাটার্ন থেকে কিছুটা আলাদা হয়েছে। তাই আপনার প্রস্তুতিতে আসবে আরো কিছু পরিবর্তন।

চলুন, আজকে গণিত নিয়ে কিছু কথা বলা যাক। প্রিলি ও লিখিত মিলিয়ে অনেকটা মার্ক থাকবে এই সেকশনে। বলা হয়ে থাকে, ভাল মার্ক পেতে বিশাল ভূমিকা পালন করে থাকে এই গণিত । খুব ভাল পরীক্ষা দিয়েও কাঙ্খিত ক্যাডার না পাওয়ার একটি প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়ায় গনিতে ভাল করতে না পারা। আর ৩৮ এর লিখিত প্রশ্ন দেখে এটাই মনে হয়েছে যে ম্যাথ প্রশ্নে হয়ত আরো বৈচিত্র্য আসতে পারে। আর তাই প্রস্তুতি নিতে হবে আরো জোরালো ভাবেই।

গতানুগতিকভাবে আপনাকে ক্লাস ৭,৮,৯ এর ম্যাথ এর উপর ভাল দখল তো থাকতে হবেই। এর কোন বিকল্প আমি দেখি না। পারমুটেশন, কম্বিনেশন সম্পর্কিত সমস্যাগুলো ভালো করে জানতে হবে। জ্যামিতির জন্য ৯ম শ্রেণীর বই থেকে উপপাদ্যগুলো পড়তে হবে। তবে অনুশীলনী থেকে প্রশ্ন হতে পারে তাই গুরুত্বপূর্ণ অনুশীলনী সংক্রান্ত সমস্যাগুলো সমাধান করতে হবে। এগুলো ভাল করে দেখবেন যেহেতু বিসিএস এর প্রশ্নে প্রতিবছর কিছু ভেরিয়েশন দেখা যাচ্ছে। যেমন ৩৮ এ লিখিত তে একটা প্রশ্ন ছিল কো অরডিনেট থেকে। তাহলে আপনি এখন কি করবেন?

আমি মনে করি, এই ক্ষেত্রে যা করতে হবে তা হল সবার চাইতে একটু এগিয়ে থাকা। যেমন ধরুন, আপনি প্রফিট এন্ড লস পড়ছেন, এবার খেয়াল করুন, বাজারের সব বইয়ে মোটামুটি এই ধরনের ম্যাথ আছে। তাই আপনি চাইলে একটু ভিন্নতার জন্য কয়েকটা বই হাতে নিয়ে এই ধরনের সমস্যাগুলো দেখতে পারেন। এতে করে আপনার প্রস্তুতিতে অনেক ভিন্নতা আসবে।বিসিএসসহ অন্যান্য চাকুরির পরীক্ষায়ও কাজে আসবে।

কিংবা আপনি ধরুন, জ্যামিতি পড়ছেন, দেখবেন, যে প্রিলির জ্যামিতি গুলো কেবল বেসিক ভাল থাকলেই পারা যায়। খুব একটা কঠিন বিষয় থেকে প্রশ্ন হয় তা কিন্তু নয়। আবার যদি আপনি লিখিত এক্সামের দিকে তাকান, দেখবেন, বৃত্ত থেকে একটা প্রশ্ন প্রায়ই আসে। হতে পারে, আপনি জ্যামিতিতে একটু দুর্বল। তাহলে সব যদি না পড়তে পারেন, তবে চাইলে কেবল বৃত্তের উপপাদ্যগুলো ভাল করে পড়ে নিন। তাহলেই তো কিছুটা ব্যাক আপ পেয়ে গেলেন। এভাবেই আপনাকে আপনার দুর্বলতা গুলো খুঁজে খুঁজে কমিয়ে নিতে হবে।
অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায়, যে বীজগনিতের প্রতি একটা ভয় থেকেই যায়। কিন্তু খেয়াল করলে দেখবেন, যে বীজগণিত থেকে প্রশ্ন আসবে, তা কিন্তু আমরা ৮ম বা ৯ম শ্রেণীর বইতে পড়ে এসেছি। তাই এড়িয়ে না গিয়ে একটু কষ্ট করে পড়ে নিলেই হচ্ছে।

আবার আপনি যদি ত্রিকোণমিতি এর দিকে তাকান, দেখবেন, প্রতিবছর এই জায়গাতে প্রশ্নে ভেরিয়েশন হচ্ছে যদিও সমাধানগুলো খুব সহজ কিন্তু এক্সাম হলে ধরতে পারাটা খুব কঠিন হয়ে যায়। তাহলে কি করতে পারবেন? আপনি ৯ম শ্রেণীর বই নিন। এখানে যা আছে তাই ভালো করে পড়ুন। এতে বেসিক ভালো হবে এবং এক্সাম হলে সমাধান করাটা সহজ হবে।

দেখুন, প্রফিট এন্ড লস, ধারা, শতকরা থেকে যে ম্যাথ গুলো আসে, এগুলো কিন্তু খুব একটা কঠিন হয় না। তাই এগুলো কোনভাবেই মিস করা যাবে না। তাই গণিত নিয়ে কাজ করার আগে, আপনি গণিতের কোন অংশ ভাল পারেন, তা জেনে নিন, এবং পরিকল্পনা সাজিয়ে নিন।

গনিতের জন্য “আমাকে পারতেই হবে” এই কথাটা মনে রাখাটা খুব জরুরী। কোনভাবেই হাল ছাড়া যাবে না। আরেকটি কথা, যাই পড়বেন, তা একেবারে বেসিক থেকে পড়বেন।

গণিতের প্রস্তুতি নিয়ে ধারাবাহিকভাবে খুব শীঘ্রই লিখব। লেখাগুলোতে বিস্তারিতভাবে সবকিছু দেয়ার চেষ্টা করব।

“Don’t spend time beating on a wall, hoping to transform it into a door. ” ― Coco Chane

লেখা সংক্রান্ত যেকোনো পরামর্শের জন্য আমার ফেসবুক inbox এ লিখতে পারেন। Facebook ID: Avizit Basak

বি দ্রঃ লেখাটাতে শুধু আমার নিজের আইডিয়া অনুযায়ী ধারণা দেয়া হয়েছে। আপনি আপনার মত করেও প্রস্তুতি নিতে পারেন। সফল হবার জন্য যে প্রস্তুতি দরকার, সেটা সম্পন্ন করাটাই মুখ্য কাজ।আর ছোটখাটো ভুল থাকলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন দয়া করে।

অভিজিৎ বসাক 
বিসিএস ( প্রশাসন) 
৩৩তম বিসিএস

নিজের সুবিধামত পড়ার জন্য টাইমলাইনে শেয়ার করে রাখুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 − 4 =